প্রকাশ :
২৪খবর বিডি:' সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। শনিবার বিভিন্ন বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ১৯ স্থানে অভিযানে ১১৭টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। '
'লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, অপ্রশিক্ষিত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। জরিমানাও করা হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে।'
-এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সভা থেকে অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। রোববার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যেও যেসব অবৈধ বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হবে না, সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে অধিদপ্তর।
'এ বিষয়ে শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. বেলাল হোসেন বলেন, অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। একটি সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই সময় শেষ হলে আমরা বসব। নিবন্ধনের কতটা অগ্রগতি হয়েছে কিংবা অবৈধ কতগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়েছে তা পর্যালোচনা করা হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
'অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকা ছাড়া কোন প্রক্রিয়ায় অভিযান চালানো হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, অবৈধ প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট তালিকা না থাকলেও বৈধগুলোর তালিকা সিভিল সার্জনদের কাছে রয়েছে। সে অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।'
-গত বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর মনিটরিং ও সুপারভিশন বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- রোববারের মধ্যে দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করা। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালু রাখা। কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা। নিবন্ধন নবায়ন না করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নবায়ন না করলে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া।
'এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে অপারেশনের সময় অ্যানেস্থেশিয়া প্রদান এবং নিবন্ধিত চিকিৎসক ছাড়া ওটি অ্যাসিস্ট রাখলে প্রতিষ্ঠান ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নিবন্ধনের জন্য নতুন আবেদনকারীদের দ্রুত লাইসেন্স দেওয়া এবং তার আগ পর্যন্ত ওই সময় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়।'
'এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির ২৪খবর বিডিকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদক্ষেপের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার খবর এসেছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। শর্ত পূরণ না করে কেউ অনৈতিক পন্থায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে পারবেন না।'
অভিযানে বন্ধ যত প্রতিষ্ঠান-
* বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর দুটি হাসপাতাল ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এ ছাড়া শেরপুর শহরের ২৬টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার দুটি ক্লিনিক, ফরিদপুর জেলা সদরসহ পাঁচ উপজেলার ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা সদরে পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল, চুনারুঘাটে দুটি হাসপাতাল ও দুটি ক্লিনিক, নাটোরের বড়াইগ্রামে অনিবন্ধিত তিনটি ক্লিনিক, জামালপুরের বকশীগঞ্জে তিনটি প্রতিষ্ঠান, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে একটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, টাঙ্গাইলে সাতটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ময়মনসিংহে একটি নার্সিং হোম ও পাঁচটি ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার, নেত্রকোনা জেলা শহরের দুটি বেসরকারি হাসপাতাল, বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিক, যশোরে ছয়টি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় তিনটি ক্লিনিক, মাগুরায় সাতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বরিশালের গৌরনদীতে চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকার নবাবগঞ্জে দুটি ক্লিনিক ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং কুষ্টিয়ার খোকসায় একটি ক্লিনিক ও ১০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।